এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া:
চকরিয়ায় হঠাৎ করে ডেঙ্গু রোগের মহামারি দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আবু ইউছুপ জয় নামের এক ছাত্রলীগ নেতা। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে চকরিয়া ছাড়াও কক্সবাজার-চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসধীন রয়েছেন অন্তত শতাধিক রোগী। গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর দুইমাসে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় অন্তত তিনশতাধিক ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন সরকারি ও প্রাইভেট হাসপাতালে। এ অবস্থায় ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এবং মাঠ পর্যায়ে রোগ প্রতিরোধ কল্পে করুণীয় নির্ধারণ করতে শনিবার স্বাস্থ্য বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম চকরিয়া সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান জমজম হাসপাতাল পরির্দশন করেছেন।
ওইসময় স্বাস্থ্য বিভাগের ডেঙ্গু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা: মামুনুর রশিদের নেতৃত্বে সহকারী অধ্যাপক ডা: রুমানা রাশেদ ও ডা: নাছির উদ্দিন সহ চার সদস্যের স্বাস্থ্য বিভাগের বশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিমের সদস্যরা চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও জমজম হাসপাতালের চিকিৎসক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদা ভাবে বৈঠকও করেছেন।
শনিবার সকাল দশটার দিকে স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম চকরিয়া জমজম হাসপাতাল ও চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন কালে বিশেষজ্ঞ টিম হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, জ্বরে আক্রান্ত রোগী, অভিভাবক, সাংবাদিক ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় জড়িতদের সঙ্গে কথা বলেন ও আগত রোগীদের রক্ত পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।
উপস্থিত কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা: মো: রফিকুচ্ছালেহীন, চকরিয়া উপজেলা প: প: কর্মকর্তা ডা: মুহাম্মদ শাহবাজ, ডা: মুজিবুল হক, ডা: মো: ফয়জুর রহমান, ডা: মো: হুমায়ুন কবির, ডা: মো: দেলোয়ার হোসেন, জমজম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: গোলাম কবির, পরিচালক রিয়াজ মো: রফিক ছিদ্দিকী প্রমুখ। হাসপাতাল পরিদর্শনকালে বিশেষজ্ঞ টিম জমজম হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত এক কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশেষজ্ঞ টিমের প্রধান প্রফেসর ডা: মামুনুর রশিদ বলেন গত এক সপ্তাহে জমজম হাসপাতালে ৪৮ জন রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করে ১৭ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়। এই অবস্থায় অত্র এলাকায় ডেঙ্গু রোগটি এখনো মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই। ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত করণ ও চিকিৎসায় জমজম হাসপাতালের ডাক্তার ও ল্যাবের ভূয়সি প্রশংসা করে তিনি বলেন সরকারি হাসপাতালের বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান জমজম হাসপাতালে আগত ডেঙ্গু রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এইজন্য হাসপাতাল ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: হুমায়ুন কবির সহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জমজম হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও সার্জন ডা: মো: ফয়জুর রহমান, প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: নাসিমা আক্তার, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: মো: হুমায়ুন কবির ও অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞ ডা: মো: দেলোয়ার হোসেন। উক্ত প্রোগ্রামটি সার্বিক সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: গোলাম কবির। সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন পরিচালক রিয়াজ মো: রফিক ছিদ্দিকী ও পরিচালক ফখরুল আনাম। সভায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশা নিধন ও এর বংশ বিস্তার রোধকল্পে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
পাঠকের মতামত: